ঢাকা বাংলাদেশ , শনিবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৫, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মূলধন ঘাটতিতে ২৪ ব্যাংক, বিপর্যয়ের মুখে আর্থিক খাত

  • Reporter Name
  • Update Time : ০২:০৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ নভেম্বর ২০২৫
  • ৪ Time View

বাংলাদেশ ব্যাংকের দেশের বিভিন্ন ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। ২৪টি ব্যাংক মূলধন ঘাটতিতে রয়েছে। এতে বিপর্যয়ের মুখে দেশের আর্থিক খাত।

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আর্থিক খাতে লুটপাটের কারণে ব্যাংকগুলোকে মাশুল গুণতে হচ্ছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

খেলাপি ঋণ, নিরাপত্তা সঞ্চিতি (কোনো নির্দিষ্ট উদ্দেশ্যে মুনাফার অংশবিশেষ দিয়ে তৈরি করা তহবিল, যা ভবিষ্যতে ব্যবহার করা হয়) বা প্রভিশন ঘাটতির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে অনেকটা উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে এ খাতের মূলধন ঘাটতি।

এসব ব্যাংকের ঘাটতির অঙ্ক দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৫৫ হাজার ৮৬৬ কোটি টাকা। গত মার্চ শেষে ২৩ ব্যাংকের ঘাটতি ছিল ১ লাখ ১০ হাজার ২৬০ কোটি টাকা। নতুন করে এনআরবিসি ও আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক ঘাটতিতে পড়েছে। এ সময় বিদেশি খাতের হাবিব ব্যাংক ঘাটতি থেকে বেরিয়ে গেছে।

জানতে চাইলে এনআরবিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান আলী হোসেন প্রধানিয়া বলেন, গত বছরের ডিসেম্বরেও এনআরবিসি ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ছিল মাত্র ৫ শতাংশ। এখন তা সাড়ে ২৮ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। এতে বড় অঙ্কের নিরাপত্তা সঞ্চিতি বা প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হচ্ছে। ফলে মূলধন ঘাটতিতে পড়েছে ব্যাংকটি। প্রকৃত চিত্র বের করার পর উত্তরণের চেষ্টা করা হবে।

ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, গত সরকারের সময় অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল অঙ্কের টাকা ঋণের নামে বের করে নেওয়া হয়। এসব ঋণ তখন খেলাপি হলেও খেলাপি দেখানো হয়নি। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর লুকানো খেলাপি সামনে নিয়ে আসে। এতে ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের অঙ্ক বাড়ছে। বর্তমানে খেলাপি ঋণের অঙ্ক প্রায় সাত লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। এর বিপরীতে চাহিদামতো নিরাপত্তা সঞ্চিতি রাখতে পারছে না ব্যাংকগুলো। ফলে মূলধন হারিয়ে ফেলছে এসব ব্যাংক, যা দেশের পুরো আর্থিক খাতের স্থিতিশীলতাকে ঝুঁকির মুখে ফেলে দিয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

মূলধন ঘাটতিতে ২৪ ব্যাংক, বিপর্যয়ের মুখে আর্থিক খাত

Update Time : ০২:০৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ নভেম্বর ২০২৫

বাংলাদেশ ব্যাংকের দেশের বিভিন্ন ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। ২৪টি ব্যাংক মূলধন ঘাটতিতে রয়েছে। এতে বিপর্যয়ের মুখে দেশের আর্থিক খাত।

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আর্থিক খাতে লুটপাটের কারণে ব্যাংকগুলোকে মাশুল গুণতে হচ্ছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

খেলাপি ঋণ, নিরাপত্তা সঞ্চিতি (কোনো নির্দিষ্ট উদ্দেশ্যে মুনাফার অংশবিশেষ দিয়ে তৈরি করা তহবিল, যা ভবিষ্যতে ব্যবহার করা হয়) বা প্রভিশন ঘাটতির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে অনেকটা উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে এ খাতের মূলধন ঘাটতি।

এসব ব্যাংকের ঘাটতির অঙ্ক দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৫৫ হাজার ৮৬৬ কোটি টাকা। গত মার্চ শেষে ২৩ ব্যাংকের ঘাটতি ছিল ১ লাখ ১০ হাজার ২৬০ কোটি টাকা। নতুন করে এনআরবিসি ও আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক ঘাটতিতে পড়েছে। এ সময় বিদেশি খাতের হাবিব ব্যাংক ঘাটতি থেকে বেরিয়ে গেছে।

জানতে চাইলে এনআরবিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান আলী হোসেন প্রধানিয়া বলেন, গত বছরের ডিসেম্বরেও এনআরবিসি ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ছিল মাত্র ৫ শতাংশ। এখন তা সাড়ে ২৮ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। এতে বড় অঙ্কের নিরাপত্তা সঞ্চিতি বা প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হচ্ছে। ফলে মূলধন ঘাটতিতে পড়েছে ব্যাংকটি। প্রকৃত চিত্র বের করার পর উত্তরণের চেষ্টা করা হবে।

ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, গত সরকারের সময় অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল অঙ্কের টাকা ঋণের নামে বের করে নেওয়া হয়। এসব ঋণ তখন খেলাপি হলেও খেলাপি দেখানো হয়নি। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর লুকানো খেলাপি সামনে নিয়ে আসে। এতে ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের অঙ্ক বাড়ছে। বর্তমানে খেলাপি ঋণের অঙ্ক প্রায় সাত লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। এর বিপরীতে চাহিদামতো নিরাপত্তা সঞ্চিতি রাখতে পারছে না ব্যাংকগুলো। ফলে মূলধন হারিয়ে ফেলছে এসব ব্যাংক, যা দেশের পুরো আর্থিক খাতের স্থিতিশীলতাকে ঝুঁকির মুখে ফেলে দিয়েছে।